প্রসেনজিৎ চৌধুরী: বিয়ের ঠিক পর পর পরিস্থিতি এমন ছিল- “বিন্দিয়া চমকে, চুড়ি খনকে-লঙ(লবঙ্গ) মারে লশকারে…”! কোথা থেকে কী যে হলো সবকিছু বদলে গেল। গত দুটি বছরের টানাটানি চলছে।
তবে এখন অবস্থা এমন- “মেহকায়া ম্যায়নে গজরা, চমকাই ম্যায়নে বিন্দিয়া, খনকায়া ম্যায়নে কঙ্গনা, ফিরভি না মিলা সাজনা..”।
‘সাজনা’ অর্থাৎ তেজপ্রতাপ যাদব ভাগলবা। কোনওভাবেই আর স্ত্রী ‘ঐশরিয়া’ ও জবরদস্ত শ্বশুর চন্দ্রিকা রাইয়ের ধারপাশে যেতে চাইছেন না। স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হতে চলেছে লালুপুত্র তেজপ্রতাপের। লিগাল সেপারেশনে রয়েছেন দুজন।
এই বিতর্কের জেরে আসন পরিবর্তন করে নিলেন তেজপ্রতাপ। বিহারের রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, তেজপ্রতাপকে ছায়ার মতো তাড়া করছেন ঐশরিয়া। তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হতে পারেন।
বিহারের প্রাক্তন দুই মুখ্যমন্ত্রী দুর্গাপ্রসাদ রাই ও লালুপ্রসাদ যাদবের পারিবারিক মধু বন্ধনে আইনি ছেদ পড়তে বেশি দেরি নেই। প্রয়াত দুর্গাপ্রসাদ রাইয়ের নাতনি ঐশরিয়া। তাঁর পিতা চন্দ্রিকা রাই দীর্ঘ সময় ধরে বিহারের রাজনীতিতে প্রভাবশালী, মন্ত্রী। আরজেডির শীর্ষ নেতা ছিলেন। দল ছেড়ে এখন তিনি লালু পরিবারের বিরুদ্ধে হুঙ্কার ছাড়ছেন। ভোটে লড়ছেন নীতীশ কুমারের পার্টি জেডিইউ থেকে।
এহেন চন্দ্রিকা রাইয়ের সুযোগ্যা কন্যা ঐশরিয়াকে বিয়ে করেন রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী তেজপ্রতাপ যাদব। তখন অবশ্য নীতীশকুমার ও লালুপ্রসাদ জুটির রমরমা। ক্ষমতায় আরজেডি-জেডিইউ জোট। লালুপ্রসাদের অপর পুত্র তেজস্বী উপমুখ্যমন্ত্রী।
হেভিওয়েট বিয়ের পরে স্বামী স্ত্রীর দূরত্ব এতটাই বাড়ে যে শ্বশুরকুল উপেক্ষা করে ঘরের মেয়ে ঘরে ফিরে যান। তারপর থেকে পুরো বিষয়টি চর্চিত। নির্বাচনের হাওয়ায় এই কাহিনি পালতোলা নৌকার মতো তরতরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।
ঐশরিয়া আদতে বৈশালী জেলার ভূমিপুত্রী। এই জেলার মছুয়া কেন্দ্র থেকেই নির্বাচনে লড়াই করছেন না তেজপ্রতাপ। হাওয়ায় ভাসছে, ঐশরিয়ার ভয়েই কেন্দ্র থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এই কেন্দ্রে তাঁর বিরুদ্ধে নামতে তৈরি ঐশরিয়া, এই বিপদ আঁচ করেই সরে আসেন তেজপ্রতাপ। তিনি সমস্তিপুরের হাসানপুর কেন্দ্রে আরজেডি প্রার্থী।
ঐশরিয়া কি হাসানপুরে দৌড়বেন তেজপ্রতাপের বিরুদ্ধে প্রার্থী হতে ? তেমনটা হলে বিহারের রাজনীতিতে নতুন রং লাগবে। তবে আরজেডি ও জেডিইউ কোনও পক্ষই মনে করছে না এমনটা হবে।
হাসনপুর সংখ্যালঘু অধ্যুষিত কেন্দ্র। এখানে দুই দলের সমর্থক রয়েছে। গত নির্বাচনে হাসনপুর ছিল এনডিএ বিরোধী জোটের দখলে। সেবার লালু নীতীশের জোট শক্তি অনায়শে জয়ী হয়। এবার দুটি পক্ষই পরস্পর মুখোমুখি। ফলে তেজপ্রতাপের কাছে লড়াই কঠিন।
বিহারের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাফাই, বিজেপির ও জেডিইউ সরকার হাসনপুরে উন্নতি করেনি। তাই এসেছি উন্নয়নের বার্তা নিয়ে। এখানেই বিতর্কে পড়েছেন তেজপ্রতাপ। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি ছেড়ে আসা মছুয়া কেন্দ্রে উন্নয়নের ধারা বইয়েছেন? উন্নয়ন হলে সেই কেন্দ্র কেন ছাড়লেন? উত্তর নেই তেজপ্রতাপের কাছে।
ছেলের জন্য চিন্তায় বিহারের আরও এক মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ি দেবী। আর ‘ঐশরিয়া’ তাল ঠুকছেন। বিন্দিয়া-চুড়ি এখন গয়নার বাক্সে তোলা আছে।
পপ্রশ্ন অনেক: একাদশ পর্ব
লকডাউনে গৃহবন্দি শিশুরা। অভিভাবকদের জন্য টিপস দিচ্ছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ।
[embed]https://www.youtube.com/watch?v=98SVIlBcikA[/embed]
Source link