Most Popular Stuff

grid/recent

১০৭টি গুলি ঢুকেছিল দেহে, পূর্ণিয়া ভোলেনি CPIM বিধায়ক অজিত সরকারকে - Kolkata24x7 | Read Latest Bengali News, Breaking News in Bangla from West Bengal's Leading online Newspaper

0




প্রসেনজিৎ চৌধুরী: বাইশ বছর পার হলেও সেই রক্তাক্ত সন্ধে বিহারকে যে বিতর্কের মুখে ফেলে দিয়েছে, তা এখনো তীব্র আলোচিত। শুধু বিহার নয়, ভারতের রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের অন্যতম ঘটনার দিন ১৯৯৮ সালের ১৪ জুন। বিহারের বাম নেতা তথা টানা বিধায়ক হওয়ার নজির গড়া CPIM নেতা অজিত সরকারকে প্রকাশ্যে খুন করা হয়।


১৪ জুনের সেই সন্ধে নাগাদ পূর্ণিয়াবাসীর ‘অজিত দা’ অভ্যাসবশত এলাকায় ঘুরছিলেন। সঙ্গী দলীয় কর্মী আসফাকুর রহমান ও গাড়ি চালক হরেন্দ্র শর্মা। তখনই ঘিরে ধরে কয়েকজন। তারপর শুরু গুলির ঝড়। সেই মুহূর্তেই পূর্ণিয়া বিহারের রক্তাক্ত ‘বন্দুক ও সিন্দুক’ রাজনীতির একেবারে চিরচর্চিত নাম হয়ে গেল।


আজও দু’দশক পরে যখন বিহারের বাম শক্তি জন আন্দোলনে থাকলেও বিধানসভায় ক্রমে বিলীন হচ্ছে, তখন প্রয়াত CPIM বিধায়ক অজিত সরকারের নাম আলোচনার শীর্ষে থাকে। বাইশ বছর আগে এই খুনের ঘটনা বিহার যেমন স্তম্ভিত তেমনি পশ্চিমবঙ্গবাসী হতবাক।


এই রাজ্যে তখন CPIM নেতৃত্বে শক্তপোক্ত বামফ্রন্ট সরকার চলছে। ফলে বিহারে দলীয় নেতা খুনের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল। ময়না তদন্তে বলা হয়, মৃত অজিত সরকারের দেহে ১০৭টি গুলি ঢুকেছে। অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতামত, কতটা জিঘাংসা তৈরি হলে এমন গুলির ঝড় তুলে মারতে হয় অজিত সরকার খুন তারই উদাহরণ।


অজিত সরকার খুনের পিছনে জড়িত থাকার অভিযোগে তৎকালীন বাহুবলী আরজেডি নেতা রাজেশ রঞ্জন ওরফে পাপ্পু যাদবের নাম উঠে আসে। এমনও দাবি করা হয়, পূর্ণিয়া পুরোপুরি কব্জা করতেই পাপ্পু যাদব এই খুন সংঘটিত করিয়েছে। বিধানসভায় প্রবল বিতর্কের মুখে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব।


অভিযুক্ত পাপ্পু যাদব মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ হওয়ায় বিতর্ক আরও বাড়ে। ১৪ জুন অজিত সরকারকে খুনের পর থেকে পূর্ণিয়া চলে গিয়েছিল প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। CPIM বিধায়ক খুন এতটাই জনগণকে নাড়া দিয়েছিল যে পুরো শহর অবরুদ্ধ হয়। জেলার বিভিন্ন অংশে ছড়ায় বিক্ষোভ। জনরোষ সামাল দিতে পূর্ণিয়া এসে আরও ক্ষোভের মুখে পড়েন লালুপ্রসাদ যাদব।


পাটনা থেকে পূর্ণিয়া মুখ্যমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টার দীর্ঘক্ষণ নামতেই পারেনি হেলিপ্যাডে। পরে অবতরণের পর বিক্ষোভরত জনতা ঘিরে ধরে মুখ্যমন্ত্রীকে। স্থানীয় CPIM নেতৃত্ব ও খুন হয়ে যাওয়া বিধায়কের পুত্র অমিত সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবের অনুরোধে বিক্ষোভ শান্ত হয়। অজিত সরকার খুনের তদন্তে জড়িত অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় পাপ্পু যাদব, রাজন তিওয়ারি ও অনিল কুমার যাদবকে।



আট বছর জেল খাটে পাপ্পু যাদব। পূর্ণিয়া মানে বিহারের সীমাঞ্চল এলাকা- এই এলাকার জেলাগুলির সঙ্গে নেপাল ও পশ্চিমবঙ্গের সীমানা রয়েছে। প্রতিবছর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া স্বাভাবিক ঘটনা। রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের কর্মী হিসেবে অজিত সরকার এই সমস্যা নিয়ে আন্দোলন করতেন। ক্রমে তাঁর জনপ্রিয়তা পূর্ণিয়া জেলা ও সংলগ্ন এলাকায় ছড়াতে থাকে।


বিহারের অতি সক্রিয় সামন্তবাদ কে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করা অজিত সরকার ১৯৮০ সালে থেকে CPIM এর বিধায়ক নির্বাচিত হন। জমির আন্দোলনে বিহারে বাম নেতা হিসেবে দ্রুত উঠে আসছিলেন, আর ছিল নির্বাচনে পরপর বিজয়। পূর্ণিয়ার ভোট লড়াইতে অজিত সরকারের প্রচার ছিল অভিনব।



রাস্তার ধারে গামছা পেতে রাখতেন। যার ইচ্ছে সেখানে ১ টাকা দিত। দিন শেষে সেই টাকার পরিমাণ দেখে ভোট পাওয়ার শতাংশ বুঝে নিতেন পূর্ণিয়াবাসীর ‘অজিত দা’। নির্বাচনে জয় ছিল প্রত্যাশিত। স্ত্রী মাধবী সরকার স্থানীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। তবে অজিত সরকারের খুনের পর তাঁকে নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন চলে।


স্বামীকে খুনের পর সহানুভুতির ভোটে CPIM প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন। এরপরেই বিতর্ক তাঁকে ঘিরে ধরে। দল সামন্তবাদে আকৃষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। বহিষ্কৃত হন। শিবির বদলে CPI(M-L) এ চলে যান।


পরবর্তী নির্বাতনগুলিতে মাধবী সরকার বারবার জামানত খুইয়েছেন। সেই হিসেবে পূর্ণিয়ায় এখন বাম শক্তি তেমন নেই। গত বিধানসভা নির্বাচনে বিহারে CPIM একটিও আসন পায়নি। তবে লাল পার্টির মান রেখেছেন CPI(M-L) দলের তিনজন বিধায়ক। অতি বামপন্থী এই দলটি বিহারের প্রধান বাম শক্তি।


এবারের নির্বাচনে এনডিএ বিরোধী মহাজোটের শরিক তিনটি বামদল CPI, CPI(M-L) এবং CPIM আশাবাদী। আর মৃত্যুর বাইশ বছর পরেও অজিত সরকার নামটি চর্চা হয় বিস্তর। তবে মিথ ও গল্পের মধ্যেই সেটি সীমাবদ্ধ।



পপ্রশ্ন অনেক: একাদশ পর্ব


লকডাউনে গৃহবন্দি শিশুরা। অভিভাবকদের জন্য টিপস দিচ্ছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ।


[embed]https://www.youtube.com/watch?v=98SVIlBcikA[/embed]


















Source link
Tags

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top